গত বুধবার সকালে চুরির অভিযোগে ‘গণপিটুনিতে’ মামুন নামে এক যুবককে হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের কিছু শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিলের এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে লারমা স্কয়ার ও পাশের উপজাতিদের বসতবাড়িতে আগুন দেয় তারা। এতে ৬০ থেকে ৭০টি দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের, পরবর্তীতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে জেলা শহরে রাতভর থেমে থেমে
চলে গুলাগুলি এতে ৩ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে নিহতরা হলেন ধনঞ্জয় চাকমা (৫০), রুবেল ত্রিপুরা (২৫) ও জুনান চাকমা (২০)।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, রাতে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ১৬ জনকে আনা হয়। এর মধ্যে তিনজন মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে। বর্তমানে হাসপাতালে আরও ৯ জন চিকিৎসাধীন।
তারই জেরে আজ শুক্রবার রাঙামাটিতেও সহিংসতার উত্তাপ ছড়িয়েছে পড়ে সকালে খাগড়াছড়ির ও দীঘিনালার সংঘর্ষের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ করে পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। পরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সকালে বনরুপায় পাহাড়ি ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের সময় দোকান, মসজিদ হামলা ও বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় একটি বৌদ্ধ বিহারে ভাঙচুর ও শহরের বিভিন্নস্থানে পাহাড়ি-বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনী।
রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী জানান, সকালে বিক্ষোভ থেকে বনরুপা বাজারে হামলা করে পাহাড়িরা, পরে বাঙালিরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এদিকে ১৪৪ ধারা জারির মধ্যে ও রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ বেশকিছু স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।