
বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের চিত্রনায়ক ও নৃত্য পরিচালক ইলিয়াস জাভেদ।পারিবারিক নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস।তবে তিনি চলচ্চিত্রে জাভেদ নামে পরিচিত।চিত্রনায়ক জাভেদ ১৯৪৭সালে আফগানিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন।পরে তার পুরো পরিবার পাঞ্জাবে চলে আসে এবং সেখানে বসবাস শুরু করে।
চিত্রনায়ক জাভেদ ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।ছোটবেলা থেকে তিনি নাচ শিখতেন।তিনি মুম্বাই থেকে নাচের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।কিন্তু তার বাবা ছিলেন ধার্মিক ব্যক্তি।তিনি এসব পছন্দ করতেন না।তার বাবার আদেশ ছিলো ইলিয়াস এসব নাচ,সংস্কৃতিচর্চা করলে তাকে ঘর ছাড়তে হবে। উল্লেখ্য যে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম ওনার খালাতো ভাই।

কিন্তু জাভেদের আগ্রহ অভিনয়ের প্রতি।তাই তিনি অভিমানে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে, ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৪বছর বয়সে পাঞ্জাব ছেড়ে পূর্বপাকিস্তানের(বর্তমান বাংলাদেশ ) ঢাকায় চলে আসেন তার নাচের দলের সঙ্গে।ঢাকায় এসে সিদ্দিক বাজারে বসবাস শুরু করেন।তিনি আর কোনোদিন তার পরিবারের কাছে ফিরে যান নি।চলচ্চিত্রে এসেই তিনি নৃত্য পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
চিত্রনায়ক জাভেদ অল্প বয়সে ১৯৬৪ সালে প্রথম “নেহি জিন্দেগী” নামের একটি উর্দু সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন।কিন্তু ছবিটির কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ার কারনে এই সিনেমাটি কোনদিন মুক্তি পায় নি।

১৯৬৮ সালে চিত্রনায়ক জাভেদ অভিনীত উর্দু সিনেমা “পায়েল” মুক্তি পায়।এই সিনেমাটি হলো জাভেদের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা।পরে এই সিনেমাটি বাংলাতে “নুপুর” নামে ডাবিং করা হয়।
১৯৭৮ সালে চিত্রনায়িকা ববিতার বিপরীতে ” নিশান” চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চিত্রনায়ক জাভেদ আলোচনায় এসেছিলেন।চিত্রনায়ক জাভেদের ক্যারিয়ারে সেরা ছবি হচ্ছে “নিশান “।এই ছবিতে চিত্রনায়ক জাভেদ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্য ছিলো।কিন্তু চিত্রনায়ক জাভেদ কোনদিন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পান নি।তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি।

চিত্রনায়ক জাভেদ নৃত্য পরিচালক হিসেবে সফল।একটা সময় ছিলো বাংলাদেশের কোনো নায়ক নায়িকা নাচ জানতো না।নায়ক রাজ্জাক,নায়িকা শাবানা থেকে শুরু করে অনেক অভিনয় শিল্পী কে চিত্রনায়ক জাভেদ নাচ শিখিয়েছিলেন। চিত্রনায়ক সাত্তার কে অনেক স্নেহ করতেন এবং নাচ ও শিখিয়ে ছিলেন।
১৯৮৯সালের ১২ই জানুয়ারি তিনি চিত্রনায়িকা ডলি চৌধুরী কে বিয়ে করেন।”চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা” সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয় ও প্রেম হয়।প্রেম থেকে বিয়েতে পরিণত হয়।তাদের বিয়ের বর্তমান বয়স ৪০ বছর হলে ও এই দম্পতি এখনো সন্তানের মুখ দেখেনি।
